Translate

রবিবার, ১০ জুন, ২০১৮

এক নজরে ড. আরসাম কুদরত এ খোদা ( মাঃ আঃ) হুজুর

বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ড. আরসাম কুদরত এ খোদা (মাঃ আঃ) হুজুর মহান সংস্কারক মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহবুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (মাঃ আঃ) হুজুর কেবলাজান ও আওলাদে রাসূল, কুতুবুল আকতাব, দূররে মাকনুন, খাতুনে জান্নাত হযরত সৈয়দা হামিদা বেগম (রহঃ)-এর মেজো সাহেবজাদা। তাঁর মাতামহ পীরানে পীর দস্তগীর, সুলতানুল মাশায়েখ, সুলতানিয়া- মোজাদ্দেদীয়া তরিকার ইমাম সৈয়দ আবুল ফজল সুলতান আহমদ চন্দ্রপুরী (রহঃ) ও মাতামহী মহীয়সী রমণী হযরত ছমিরুন্নেছা খানম (রহঃ)। তাঁর পিতামহ হযরত আবদুর রশিদ সরকার (রহঃ) ও পিতামহী হযরত জোবেদা খাতুন (রহঃ) উভয়ই ছিলেন উচ্চ পর্যায়ের সূফী সাধক।

শুভজন্মঃ

ড. আরসাম কুদরত এ খোদা (মাঃ অাঃ) হুজুর ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই জুন পবিত্র রমজান মাসে শবে কদরের মহিমান্বিত রজনীতে জন্মগ্রহণ করেন। মহান রাব্বুল আলামিন তাঁকে এমনি একটি রহমত ও বরকতময় রজনীতে জগতের বুকে প্রেরণ করেন, যে রজনীকে হাজার মাসের চেয়ে উত্তম বলে পবিত্র কুরআনে উল্লেখ করা হয়েছে। এ মহিমান্বিত রজনীতে শুভাগমনের জন্য তাঁর ডাক নাম রাখা হয়েছে "কদর"। ইংরেজীতে একটি প্রবাদ আছে-' Morning shows the day' অর্থাৎ - প্রভাতেই দিনের পরিচয় প্রকাশ পায়। তাঁর ক্ষেত্রে এ বাক্যটি বিশেষভাবে প্রযোজ্য। তিনি যে সাধারণ ব্যক্তি নন, তাঁর শিশুকালেই সেটা প্রকাশ পেয়েছে। সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজান "মোশের্দের দরবারে মুরীদের করণীয়" নামক গ্রন্থের শুভেচ্ছা বাণী মোবারকে তার সম্পর্কে বলেছেন " আমার সাত সন্তানের মাঝে সে পন্ঞম। মাতৃগর্ভের সাত মাস বয়সেই সে দুনিয়াতে আগমন করে। জন্মের সাত দিনের মাথায় আমি আমার দুই হাতের দুটি আঙ্গুল তাঁর দিকে বাড়িয়ে দিয়েছিলাম, সে আমার অাঙ্গুল দুটি শক্তভাবে ধরে শোয়া থেকে দাঁড়িয়ে আল্লাহ্ প্রদত্ত উজ্জ্বল ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দিয়েছিল। শিশু বয়সে যখন সে বসতে পারতো না, তখনকার সময় আমি যখন তার মায়ের সাথে তরিকার বিষয়ে অালাপ-আলোচনা করতাম, তখনই তার জজবাহ হয়ে যেত। আল্লাহর প্রেম ওয়াজদের হালতে সে বিছানায় গড়াগড়ি খেত। মহান রাব্বুল আলামিনের অপার দয়ায় আমি আমার অন্য সন্তানদের মতই কিশোর বয়সে তাকে মোরাকাবার মাধ্যমে আল্লাহ ও রাসূল (স:) এর সাথে যোগাযোগের পদ্ধতি শিখিয়েছি। এর ফলে সে আমার অন্যান্য সন্তানদের মতই যে কোনো সমস্যায় কি করণীয়- মোরাকাবার মাধ্যমে আল্লাহর সাথে যোগাযোগ করে সমাধান আনতে পারে।"

সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের এ বাণী মোবারক থেকে সুস্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, ড. ইমাম সৈয়দ কুদরত এ খোদা (মাঃ আঃ) মোহাম্মদী ইসলামের আকাশে ধ্রুবতারা হয়ে জগতে আবির্ভূত হয়েছেন।

শিক্ষা জীবন

ড. ইমাম সৈয়দ এ. এফ. এম কুদরত এ খোদা (মাঃ আঃ) এসএসসি ও এইচএসসি উভয় পরীক্ষাতে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন। অতঃপর ধর্মতত্ত্বের উপর উচ্চতর ডিগ্রী লাভের জন্য তিনি দি পিপলস ইউনিভারসিটি অব বাংলাদেশ (পিইউবি)  -এ ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে বিএ (অনার্স) এ ভর্তি হন এবং অনার্স পরীক্ষায় মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অর্জন করে চ্যান্সেলর'স অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হন। তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ ফাইনাল পরীক্ষায় ১২টি বিষয়ের সবগুলো বিষয়ে A+ পেয়ে মেধা তালিকায় ১ম স্থান লাভ করেন। ইতিপূর্বে দি পিপলস ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (পিইউবি)- এর ইসলামিক স্টাডিজ বিষয়ে এমএতে কোনো শিক্ষার্থী সব বিষয়ে A+ পাননি। তিনিই প্রথম এ কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল করতে সক্ষম হন।তাঁর এ অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য ইউনিভার্সিটি থেকে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তাঁকে 'চ্যান্সেলর'স অ্যাওয়ার্ড ' প্রদান করা হয়। এছাড়া এম এ ফাইনাল পরীক্ষায় তাঁর এই অসাধারণ ফলাফলের জন্য সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজান সন্তুষ্ট হয়ে তাঁকে গোল্ড মেডেল প্রদান করেন।ছাত্রাবস্থায় অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কালচারাল প্রোগ্রামে তিনি অসাধারণ যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখেন। তাঁর নেতৃত্ব ও সাংগঠনিক দক্ষতার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. অাব্দুল মান্নান চৌধুরী তাঁকে 'Best Leadership Award' প্রদান করেন। সৈয়দ কুদরত এ খোদা একজন শিক্ষানুরাগী। তিনি শুধু ধর্মতত্ত্বের উপর উচ্চতর ডিগ্রীলাভ করেননি, আইন বিষয়েও উচ্চতর ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি এল-এল.বি (অনার্স) এবং এল-এল.এম পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণী অর্জন করেন। তিনি ২০১৬ সালে যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত Isles International University হতে পি.এইচ.ডি ডিগ্রী করেন। তার থিথিসের শিরোনাম ছিল A Study on origin and Evolution of Islam তার থিথিসের সুপারভাইজার ছিলেন prof. dr. Philip W Rundel.

সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের আদর্শ প্রচারে ভূমিকা

ড. ইমাম সৈয়দ এ. এফ. এম. কুদরত এ খোদা (মাঃ অাঃ)- এর গৌরবগাথা জীবন পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের সুমহান শিক্ষা ও আদর্শ বিশ্বব্যাপী প্রচার করাই তাঁর জীবনের ব্রত। শৈশব থেকেই তিনি এ ভাবনায় বিভোর থাকতেন। শৈশবেই তিনি উপলদ্ধি করেন দেশ ও জাতি গঠনে যুবকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। আজকের যুবক আগামী দিনের জাতির কর্ণধার। কিন্তু সেই যুবক যদি জীবনের শুরুতে অন্যায় ও অপরাধ মূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে, তাহলে সেটা দেশ ও জাতির জন্য হব অমঙ্গলজনক। তাই ১৯৯৩ খ্রিষ্টাব্দে মাত্র ৮ বছর বয়সে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের নিয়ে তিনি 'ইনসানিয়াত ক্লাব' নামে একটি সামাজিক সেবামূলক সংগঠন গড়ে তোলেন। তিনি ইনসানিয়াত ক্লাবের সদস্যদের মোহাম্মদী ইসলামের সুমহান শিক্ষা ও অাদর্শ নিজ হৃদয়ে ধারণের তালিম দিতেন এবং তাদেরকে মোর্শেদের দরবারে বিভিন্ন গোলামীতে সম্পৃক্ত রাখতেন। যেন যুব সম্প্রদায় সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের সোহবতে থেকে আলোকিত মানুষ রূপে নিজেকে গড়ে তুলতে পারে। এভাবে মোহাম্মদী ইসলামের অগ্রযাত্রা ও সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের আদর্শ প্রচারে তাঁর পথচলা শুরু হয়। তিনি তাঁর সংগঠনের পক্ষ থেকে ১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে বীর মুক্তিযোদ্ধা সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানকে সংবর্ধণা দেওয়ার জন্য সর্বপ্রথম অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।তাঁর এই উদ্যোগ গ্রহণের ফলে এখনো প্রতিবছর বিজয় দিবসে 'আশেকে রাসূল মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ' বীর মুক্তিযোদ্ধা সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানকে সংবর্ধণা দিয়ে থাকেন। সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের শুভ জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠান যথাযথ মর্যাদা ও বিপুল উৎসাহ -উদ্দীপনার সাথে উৎযাপনের জন্য তিনি নানা ধরণের পদক্ষেপ ও কর্মসূচী গ্রহণ করেন। তাঁর সরাসরি তত্ত্বাবধানে সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের শুভ জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে প্রতিবছর 'সূফী সম্রাট' নামক স্মরনিকা প্রকাশিত হয়ে থাকে। এ ছাড়া তিনি ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের বর্ণাঢ্য জীবনের নানা আলোকচিত্র তুলে ধরে ধানমন্ডির দৃক গ্যালারীতে 'Reviver of Muhammadi Islam' শিরোনামে Photography Exhibition আয়োজন করেন। তাঁর নিজের তোলা সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের দূর্লভ ছবিগুলো Exhibition এ আগত সুধীজনদের নিকট বিপুল প্রসংশিত হয়। আমি নিজেও এ প্রদর্শনী দেখে অভিভুত হই। আল্লাহ প্রেরিত কোনো মহামানবকে নিয়ে Photography Exhibition প্রদর্শনের ঘটনা বিশ্বে এই প্রথম।

মেজো সাহেবজাদা তাঁর দীর্ঘদিনের সাধণালব্ধ আধ্যাতিক জ্ঞানের আলোকে আদাবুল মুরীদ ও গোলামী বিষয়ে আশেকে রাসূলদের তালিম দিয়ে থাকেন।মোর্শেদের দরবারে কিভাবে আদব রক্ষা করে চলতে হয়, কিভাবে গোলামী করতে হয়, এ বিষয়ে তাঁর দিক নির্দেশনা সাধণা জগতে পূর্ণতা লাভের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

তিনি একজন দক্ষ সংগঠকও বটে। সাংগঠনিক কার্যক্রমে তিনি যথেষ্ট দক্ষতা ও সফলতার পরিচয় দিয়েছেন। দেওয়ানবাগ শরীফের বিভিন্ন বিভাগ ও উপবিভাগের মধ্যে তিনি সমন্বয় সাধন করে মোর্শেদ প্রেমিকদের সুষ্ঠু ভাবে গোলামী করার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছেন। বর্তমানে তিনি ব্রামণবাড়িয়া জেলায় অবস্থিত বাবে মোর্শেদ, দেওয়ানবাগ শরীফ ও রংপুর জেলায় অবস্থিত বাবে নাজাত, দেওয়ানবাগ শরীফের পরিচালক পদে দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন। উল্লেখ্য যে, তাঁর অসাধারণ ব্যক্তিত্ব ও যোগ্যতার জন্য নিজ গ্রাম বাহাদুরপুরে নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ তরুণ বয়সেই তাকে 'আফতাব উদ্দিন মুন্সি ওয়াকফ এস্টেট' - এর মুতাওয়াল্লীর দায়িত্ব অর্পণ করেন। তিনি দক্ষতা ও সফলতার সাথে এ দায়িত্ব পালন করছেন।

মোহাম্মদী ইসলাম প্রচারে তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহারে ভূমিকা

বর্তমান যুগ বিজ্ঞানের উন্নতির স্বর্ণযুগ। এযুগের মানুষ ব্যস্ততার জন্য ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও নিয়মিত সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের সান্নিধ্যে এসে তাঁর অমীয় বাণী মোবারক শোনার সুযোগ পান না। এ ছাড়া বহির্বিশ্বের মানুষের জন্য তা দুরূহ ব্যাপার। বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে সাথে ধর্মকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তাই মেজো সাহেবজাদা তথ্য প্রযুক্তির এমন একটি মাধ্যম চিন্তা করলেন, যা দ্বারা সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের অমীয় বাণী, শিক্ষা, অাদর্শ, দর্শন ও প্রকাশণা প্রতিটি মানুষের কাছে খুব সহজেই তুলে ধরা যায়, আর সে মাধ্যমটি হলো ইন্টারনেট। অত্যাধুনিক এ প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে সূফী সম্রাট হুজুর কেবলার অাহবান বিশ্ববাসীর নিকট তুলে ধরার লক্ষ্যে তিনি ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে তৈরি করলেন ডোমেইন ওযেবসাইট www.dewanbagsharif.org এ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিশ্বের মানুষ আজ দেওয়ানবাগ শরীফের আপডেট নিউজ পাচ্ছেন। এ ছাড়া সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজান প্রণীত পুস্তকাদি ও দেওয়ানবাগ শরীফ থেকে প্রকাশিত গ্রন্থাবলীসহ সকল প্রকাশনা অনলাইনে পড়তে পারছেন। তাঁর উদ্যোগে তৈরী এ ওয়েব সাইটটির তথ্য প্রতিনিয়ত সমৃদ্ধ হচ্ছে। ওয়েবসাইট টি ইংরেজি ভাষায় তৈরি করা। ফলে এর মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষ সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের সুমহান শিক্ষা ও অাদর্শ সম্পর্কে জানতে পারেন। তিনি ওয়েব সাইটটির বাংলা সংস্করণের কাজ ইতিমধ্যে শুরু করেছেন। উল্লেখ্য যে, লাইভ ট্রান্সমিশন এ ওয়েব সাইটটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় কন্টেইন। এ কন্টেইন এর মাধ্যমে সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের বাণী মোবারক সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। ফলে দেশ বিদেশের আশেকে রাসূল ও মুক্তিকামী মানুষ হাজার হাজার মাইল দূরে থেকেও সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানকে দেখতে পান এবং তাঁর অমীয় বাণী মোবারক শুনতে পান। শান্তির ধর্ম মোহাম্মদী ইসলাম প্রচারে সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজান যে উদ্যোগ নিয়েছেন, মেজো সাহেবজাদা এ ওযেবসাইটির মাধ্যমে বিশ্ববাসীর নিকট তা তুলে ধরেছেন। তিনি মোর্শেদ প্রেমিকদের তরিকতের শিক্ষা ও দিক নির্দেশনা দেওয়ার জন্য সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে 'Purity of Soul' নামক একটি ঐতিহাসিক গ্রুপ তৈরি করেন। এ ছাড়া তিনি সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের আশেক প্রেমিকদের দরবার শরীফে নিয়মতান্ত্রিক গোলামী করার সুবিধার্থে Digital Database- এর ব্যবস্থা করেছেন। এ প্রকল্পের মাধ্যমে মোর্শেদ প্রেমিকদের দরবার শরীফের গোলামী সম্পর্কিত তথ্যাবলী স্বয়ংক্রিয়ভাবে জানা যাবে।

বহির্বিশ্বে মোহাম্মদী ইসলামের জাগরণে ভূমিকা
মোহাম্মদী ইসলামের সুমহান আদর্শ আজ বিশ্বের শতাধিক দেশে প্রচারিত হচ্ছে। বহির্বিশ্বের মোর্শেদ প্রেমিকেরা সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানকে কাছে পাওয়ার জন্য সর্বদা ব্যাকুল থাকে। তাদের মনে এ পুন্জিভূত বেদনা উপলদ্ধি করে সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের শিক্ষা ও আদর্শ সরাসরি তালিম দেওয়ার লক্ষ্যে ইমাম সৈয়দ কুদরত এ খোদা (মাঃ আঃ) আন্তর্জাতিক সফর শুরু করেন। সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের অনুমতিক্রমে মোহাম্মদী ইসলাম প্রচারের লক্ষ্যে তিনি ২০১০ সালে মালয়েশিয়া সফর করত: সেখানে আশেকে রাসূল (সঃ) সম্মেলন করেন। তাঁর উপস্থিতি মালয়েশিয়ার আশেকে রাসূল মোর্শেদ প্রেমিকদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি করে এবং মালয়েশিয়ায় মোহাম্মদী ইসলাম প্রচারের এক নবদিগন্ত উম্মোচিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি ভারত,  নেপাল, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সফর করেন। ফলে বহির্বিশ্বে মোহাম্মদী ইসলাম প্রচারের নবজাগরণ সূচিত হয়েছে। যে দেশগুলোতে মোহাম্মদী ইসলাম প্রচারিত হচ্ছে ভবিষ্যতে প্রত্যেকটি দেশে তিনি সফর করে মোহাম্মদী ইসলামের অগ্রযাত্রাকে অান্তর্জাতিকভাবে আরো বেগবান করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। উল্লেখ্য যে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত মোর্শেদ প্রেমিকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগের জন্য তিনি ভিডিও কনফারেন্স করে থাকেন।

শিক্ষা ক্ষেত্রে ও সামাজিক কর্মকান্ডে ভূমিকা
ড. আরসাম কুদরত এ খোদা (মাঃ আঃ) একজন শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্ব। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শেষ করে শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে তিনি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে নিজেকে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রেখেছেন। তিনি ব্রাক্ষ্রণবাড়ীয়া জেলার বাহাদুরপুর উত্তর প্রাইমারী স্কুলের পরিচালক ও ঢাকার আমেরিকান কলেজের উপদেষ্টার পদে অধিষ্ঠিত আছেন। বাংলাদেশের ন্যাচার ফটোগ্রাফী অ্যাসোসিয়েশনের তিনি প্রেসিডেন্ট। তাঁর সাংগঠনিক কর্মতৎপরতা ও দক্ষতার স্বীকৃতি স্বরূপ তাঁকে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (এআইইউবি) থেকে Community Leadership Award প্রদান করা হয়।

মেজো সাহেবজাদা সদা হাস্যোজ্জল, মিষ্টভাষী, মানবদরদী ও উদার মনের অধিকারী। ধর্মীয় কর্মকান্ডের পাশাপাশি নিজেকে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত রেখেছেন। তিনি মতিঝিল আরামবাগ ফকিরের পুল এলাকার সামাজিক সংগঠন 'ইনসানিয়াত ক্লাব' এর প্রতিষ্ঠাতা মহাপরিচালক।

তাঁর সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতা ও সার্বিক সহযোগিতায় এ ক্লাবের পক্ষ থেকে তিনি প্রতিবছর শীতার্ত মানুষকে শীতবস্ত্র ও কম্বল বিতরণ করে থাকেন। তিনি সন্ত্রাস, ইভটিজিং ও ধূমপানমুক্ত সমাজ গঠনের লক্ষ্যে জনসচেতনতামূলক বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচী গ্রহণ করেন। মেজো সাহেবজাদা বাবে মোর্শেদ,  দেওয়ানবাগ শরীফ এলাকার মানুষের মাঝে প্রতিবছর শীতের সময় শীতবস্ত্র ও কম্বল বিতরণ করে থাকেন। এছাড়া সেখানকার অধিবাসীদের প্রতি মাসে একদিন বিনা খরচে চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা করেছেন। ঢাকার একদল বিশেষজ্ঞ ডাক্তার তাঁর এ সামাজিক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত রয়েছেন। প্রচারবিমুখ মেজো সাহেবজাদা বিভিন্ন সামাজিক কাজে নিজেকে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রেখেছেন। মূলত ড. আরসাম কুদরত এ খোদা (মাঃ অাঃ) তাঁর জ্ঞান, প্রজ্ঞা,  প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব ও অসাধারণ ব্যক্তিত্বের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের পরিচয় তুলে ধরেছেন। শান্তির ধর্ম মোহাম্মদী ইসলামের অগ্রযাত্রায় তিনি যে অনন্য সাধারণ ভূমিকা রাখছেন, সত্যিই তা প্রশংসার দাবী রাখে। মহান স্রষ্টার দরবারে তাঁর সার্বিক উন্নতি ও সফলতা কামনা করছি।

অধ্যাপক ড. এস এম নজরুল ইসলাম
ভাইস চ্যান্সেলর
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়


সোমবার, ৪ জুন, ২০১৮

সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ সহ ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি পালন করার প্রয়োজনীয়তা ও এই বিষয়ে ১৫টি যৌক্তিক কারণ:

★১. মুসলিম জাতি একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি।  পবিত্র কোরআনে এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে: "তোমরা আল্লাহর রজ্জুকে শক্ত করে ধরো ও পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না।" যদি আমরা দুই দিনে ঈদ উৎসব পালন করি তবে কোরআনের এই আয়াতটি অবমাননা করা হবে।

★২. হযরত রাসূল (স:) এর জীবদ্দশায় একই দিনে সব অঞ্চলে ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করা হতো। কোন অঞ্চলে একদিনে আগে আবার কোন অঞ্চলে এক দিন পরে অনুষ্ঠান করা হতো না। সেই মাফিক আমাদেরকে একই দিনে ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করতে হবে।

★৩. আমরা ফজর, জোহর, আসর, মাগরিব এশা ও জুমার নামাজ সৌদির আরবের সময়ের চেয়ে ৩ ঘন্টার ব্যবধানে পড়ি। অথচ শুধুমাত্র ঈদের নামাজ ২১ ঘন্টার পর আদায় করার কোনো যৌক্তিকতাই নেই। যদি অন্যান্য নামাজ ৩ ঘন্টার ব্যবধানে আদায় করি তবে ঈদের নামাজও ৩ ঘন্টার ব্যবধানে পড়াই উত্তম হবে।

★৪. হযরত ওমর (আ:) এর শাসনামলে মুসলিম রাজ্যের অায়তন বৃদ্ধি পেলে তিনি ধর্মীয় অনুষ্ঠান সঠিকভাবে করার জন্য তার উপদেষ্টা কমিটির সদস্যদের নিয়ে একটি বিজ্ঞান ভিত্তিক ক্যালেন্ডার তৈরি করেন। যে ক্যালেন্ডার টি মুসলিম সমাজ থেকে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বিলুপ্ত প্রায় ঐ ক্যালন্ডারটি পুনরায় অনুসরণ করলে সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ করা হবে।

★৫. হাদীস শরীফে বলা হয়েছে: বিশ্বাসযোগ্য বিষয়ে সন্দেহ পোষণ করা যেমন অশুদ্ধ, তেমনি সন্দেহ জনক বিষয়ে বিশ্বাস করাও অশুদ্ধ। আমরা যদি সারাবিশ্বে সাথে তাল মিলিয়ে ঈদ না করে, যদি একদিন পর ঈদ করেই শুদ্ধ মনে করি তবে হাদীস অনুসারেও ভুল হবে। এজন্য একই সাথে ঈদ করতে হবে।

★৬. আমরা এক নবীর উম্মত অথচ ঈদ করি দুই দিনে। যাহা অন্য ধর্মালম্বীদের কাছে হেয়, হাস্যকর ও লজ্জাজনক হচ্ছে। এর কারণে তাদের কাছে আমাদের নবীর মানও ক্ষুন্ন হচ্ছে। তার সম্মানের খাতিরেও একই দিনে ঈদ করা প্রয়োজন।

★৭. পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে: তিনি (আল্লাহ) সূর্যকে তেজস্কর করেছেন, চন্দ্রকে করেছেন জ্যোতির্ময় ও তার তিথিসমূহ নির্দিষ্ট করেছেন। যাতে তোমরা বৎসর গণনা ও সময় নির্ণয়ের জ্ঞান লাভ করতে পারো, আল্লাহ এসব নিরর্থক সৃষ্টি করেননি, জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্যে তিনি সমস্ত নিদর্শন বিশদভাবে বণর্না করেন। (সূরা ইউনূস আয়াত ৫)। আমাদের দেশের বর্তমান প্রচলিত ক্যালেন্ডারটি গণনা ভিত্তিক নয় বা সম্পূর্ণ বিজ্ঞান ভিত্তিক নয়। এটা দেখা ভিত্তিক। তাই এটা দ্রুত সংস্কার করে গণনা ভিত্তিক করলেই, সারা বিশ্বে একই দিনে ঈদ সম্ভব।

★৮. হানাফী মাজহাবের ইমাম হযরত আবু হানিফা (রহ:) সারা বিশ্বে একই দিনে ঈদ বা রোজা শুরু প্রসঙ্গে একমত পোষণ করে বলেন: "উদয়স্থল এলাকা বা রাষ্ট্র বিবেচনার বিষয়বস্তু হবেনা। চন্দ্র উদয়ের ব্যাপারটি শুধু বিবেচ্য হবে। মাজহাবের প্রকাশ্য মত এটিই"।তার মতেও সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ করা প্রয়োজন। তার এ মতের সাথে মাজহাবে আরও ২ ইমাম একমত পোষণ করেছেন।
অন্যতম ফতোয়ার কিতাব "ফতোয়ায়ে আলমগীরিতেও ইমাম আবু হানিফার এ মতটিকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। 

 ★৯. এছাড়া ফতোয়ায়ে কাজী খানে উল্লেখ করা হয়েছে, ফকিহ আবু লাইস ও সামসুল আইম্মাহুনাওয়ানী এরূপ ফতোয়া প্রদান করেন: "যদি পশ্চিম দেশীয় লোক রমজানের চাঁদ দর্শন করে, তবে পুর্ব দেশীয় লোকদের উপর রোজা রাখা ওয়াজিব হয়ে যাবে"। তার মতেও একই দিনে ধর্মীয় অনুষ্ঠান করার কথাই বলা হয়েছে।

★১০. "খোলাসা" নামক আরেকটি ফতোয়ার কিতাবে বলা হয়েছে: "যারা পরে চাঁদ দেখে (১ দিন পর) তাদের ওপরও রোজা ফরজ হবে। যদি ঐ দেশীয় লোকদের চাঁদ দেখার সংবাদ নিভর্রযোগ্য সূত্রে এসে পৌছে"। সুতরাং এ মতটি দ্বারা কোথাও চাঁদ উঠার সংবাদ পেলে একই সাথে রোজা রাখার কথা বলা হয়েছে।

★১১. মোজতাহেদ আল্লামা রশীদ রেজা  "তাফসীরুল মানারে" একই দিনে ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনের পক্ষে মত দেন।

★১২. ১৯৬৯ সালে ২১-২৭ এপ্রিল মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত মুসলিম ওলামা সম্মেলনে একই দিনে ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনের ব্যাপারে সুপারিশ করা হয়।

★১৩. ১৯৭৪ সালে আলজিরিয়ায় শিক্ষা ও ধর্ম মন্ত্রনালয়ের পক্ষ থেকে একই দিনে ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনের জন্য একমত পোষণ করা হয়।

★১৪. ১৯৭৮ সালে ইস্তাম্বুলে একটি সেমিনারে একই দিনে ঈদ ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনের জন্য ২ টি কমিটি গঠন করা হয়। তারাও এ বিষয়ে একমত পোষণ করেন।

★১৫. একই দিনে ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনের জন্য ১৯৯৫ সালে পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত ওআইসির সম্মেলনে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী হুজুরের উদ্ভাবিত অষ্টবর্ষচক্র ক্যালেন্ডারটি সারাবিশ্বে প্রচলন এর মাধ্যমে ঈদ সমস্যার সমাধানে সবাই একমত পোষণ করেন। এ ক্যালেন্ডার গণনা করে নিশ্চিত ভাবে চন্দ্র উদয়ের তারিখ বলে দেয়া সম্ভব। এ ক্যালেন্ডার টি আবিস্কারের জন্য ওআইসির সম্মেলনে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী হুজুরের ভূয়সী প্রসংসা করা হয়। এবং অচিরেই তা বাস্তবায়নের আহবান জানানো হয়।

অবশেষে বলবো আজ যদি রাসূল (স:) সোনার মদিনায় স্বশরীরে থাকতেন ও ঈদ করতেন তবে কি আমরা আজ ঈদ না করে ১/২ দিন পর ঈদ করতাম। নিশ্চয়ই তা করতাম না। নবীজির সাথে একই দিনে সারাবিশ্বে ঈদ করতাম। 

তাই আসুন মহান রাব্বুল আলামিনের প্রাথর্না জানাই তার অলিবন্ধুর উসিলায় সারাবিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের মুসলিমদেরও একই দিনে ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করার ব্যবস্থা করে দেন। আমিন।

সহায়িকা গ্রন্থ : সূফী সম্রাটের যুগান্তকারী ধর্মীয় সংস্কার ১ম খন্ড।