Translate

সোমবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

মহিমান্বিত ২৫ ফেব্রুয়ারি ইমাম শাহ্ চন্দ্রপুরী (রহঃ) এর শুভ জন্মদিন।



ইমাম সৈয়দ আবুল ফজল সুলতান আহমদ শাহ চন্দ্রপুরী (রহঃ) ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ ফেব্রুয়ারি রোজ শুক্রবার বর্তমান ফরিদপুর জেলার চন্দ্রপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার সম্মানিত পিতার নাম হাজী মোহাম্মদ কোরবান আলী খান (রহঃ) ও সম্মানিত মাতার নাম হযরত খাদিজা খাতুন (রহঃ)।

আকিকার অনুষ্ঠানে তার নানাজী হযরত মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন মুন্সি (রহঃ) তার নাম রাখেন -আবুল ফজল সুলতান আহমদ। আবুল ফজল অর্থ সম্মানিত ব্যক্তিদের পিতা, সুলতান আহমদ শব্দের অর্থ চরম প্রসংশা কারীদের বাদশা। বাস্তব জীবনেও চন্দ্রপুরী (রহঃ) এর নামের অর্থ যথাযথ প্রতিফলিত হয়েছে।

বাল্যকালে ইমাম হুজুর অন্যান্য ছেলেদের চেয়ে আলাদা ছিল। সে যা বলতো অলৌকিক ভাবে তাই ঘটত।

(চলবে)

শনিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

আল্লাহর দেয়া পুরস্কারঃ পূর্ণিমার চাঁদে বাবা দেওয়ানবাগী (মাঃ আঃ) অনুষ্ঠান পালিত।

গতকাল ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ রোজ শুক্রবার ঢাকার প্রাণকেন্দ্র মতিঝিলের বাবে রহমত দেওয়ানবাগ শরীফে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী (মাঃ আঃ) হুজুর কেবলাজান কে পূর্ণিমার চাঁদে দেখা উপলক্ষে শোকরানা সরূপ 'আল্লাহর দেয়া পুরস্কারঃ পূর্ণিমার চাঁদে বাবা দেওয়ানবাগী (মাঃ আঃ) অনুষ্ঠান পালন করা হয়।
এ অনুষ্ঠান উপলক্ষে সকাল ১১ঃ৩০ মিনিটে রাজধানীর কমলাপুরে অবস্থিত বাবে মদিনার সামনে থেকে এক বিশাল আনন্দ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি আশেপাশের এলাকা প্রদক্ষিণ শেষে বাবে রহমত চত্ত্বরে এসে শেষ হয়।
এরপর বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা হতে আগত অসংখ্য আশেকে রাসূলগণ শান্তির দূত সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী হুজুর কেবলাজানকে ফুলেল শুভেচ্ছা প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে দিবসটির তাৎপর্য ও মোর্শেদপ্রেম নিয়ে আলোচনা করেন দেওয়ানবাগ শরীফের উপ-মহাপরিচালক, সমন্বয়ক, সমস্ত সমস্যার ফয়সালাকারী, প্রখ্যাত গবেষক, লেখক ও অধ্যাপক ডক্টর আরসাম কুদরত এ খোদা (মাঃ আঃ) হুজুর। এছাড়াও আলোচনা করেন দেওয়ানবাগ শরীফের মহাসচিব ডক্টর এম সাইদুর রহমান আল মাহবুবী। অনুষ্ঠানে জুমার নামাজের পূর্বে আশেকে রাসূল (সঃ) মিলাদ ও শুকরিয়া জ্ঞাপন করে দু রাকাত শোকরানার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। বাদ জুমা শান্তির দূত, বীর মুক্তিযোদ্ধা, আশেকের নয়নমনি, চন্দ্রপৃষ্ঠে দেখা একমাত্র মহামানব, সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী (মাঃআঃ) হুজুর কেবলাজান আগত সমস্ত আশেকে রাসূলদের উদ্দেশ্যে মূল্যবান আলোচনা শেষে আখেরী মোনাজাত পরিচালনা করেন। অনুষ্ঠান শেষে তাবারুক বিতরণ করা হয়।

বুধবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

দেওয়ানবাগ শরীফে খেদমত করায় অলৌকিকভাবে ঈদের পোষাক প্রাপ্তি।


আশেকে রাসূল চুন্নু মিয়া (শেখ কালু)। তিনি গােপালগঞ্জ জেলার অধিবাসী। তিনি মােহাম্মদী ইসলামের সবক গ্রহণ করেন ২০০৭ সালে। তার বর্ণিত ঘটনাটি ২০০৮ সালের। তিনি তরিকা গ্রহণের পর থেকেই দরবার শরীফে খেদমত করার চেষ্টা করেন। এ ঘটনার সময় তিনি দরবার শরীফে একটানা ৩ থেকে ৪ মাস নিরবচ্ছিন্ন খেদমতে নিয়ােজিত ছিলেন। এদিকে তিনি যখন তার মহান মাের্শেদ মােহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মাঃ আঃ) হুজুর কেবলাজানের দরবার শরীফে খেদমতে মশগুল, তখনই পবিত্র ঈদুল ফিতর চলে আসে। ঈদের ৩ / ৪ দিন পূর্বে তার স্ত্রী বাড়ি থেকে তাকে ফোন করে এবং বাড়িতে যাওয়ার অনুরােধ করে যে, আপনি বাড়িতে এসে ছেলে-মেয়েদের ঈদের নতুন পােশাক কিনে দিয়ে যান। তিনি ঢাকায় কাজের সন্ধানে এসে অলী আল্লাহর দরবার শরীফে যে খেদমত করছেন এ বিষয়টি তার স্ত্রীর জানা ছিল না। এদিকে স্ত্রীর আবদারের সাথে তিনিও বুঝতে পারছিলেন যে, সামনে ঈদ, ছেলেমেয়ে ও স্ত্রীসহ সকলকে নতুন পােশাক কিনে দেয়া দরকার, অনেক টাকা প্রয়ােজন। কিন্তু সে তাে ঢাকায় এসে কোন চাকরি বা ব্যবসা করছিল না। টাকা পাবে কোথায় ? এ কঠিন বাস্তবতায় তিনি তার মহান মাের্শেদ সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মাঃ আঃ) হুজুর কেবলাজানের মাধ্যমে আল্লাহর উপর নির্ভর করেন এবং মনে মনে আজিজি করেন, “ হে দয়াল মাের্শেদ ! দয়া করে আমাকে সাহায্য করুন। তারপর পুরাে বিষয়টি তিনি দয়াল মাের্শেদের মাধ্যমে আল্লাহর উপর ন্যস্ত করে দেন যে, আপনিই দয়া করে দেখেন আমার পরিবারের কি প্রয়ােজন? অতঃপর যথারীতি দরবার শরীফে তিনি তার খেদমতের কাজ চালিয়ে যান।ঈদের অনুষ্ঠান উদযাপন শেষে দরবার শরীফে খেদমতের কাজ সম্পন্ন করে ২ / ৩ দিন পর তিনি বাড়ি ফিরে যান বাড়ি গিয়ে দেখেন, তার পরিবারের সবাই খুশি, আনন্দের সীমা নেই। তার ছেলে মেয়েদের সকলের পরিধানে ঈদের নতুন পােশাক।ঈদ চলে গেলেও ঈদের আনন্দের জোয়ার তখনো তার পরিবারে বইছে। অতঃপর তার স্ত্রী তাকে ছেলেমেয়েদের জন্য আরো ৫ / ৬ সেট নতুন পােশাক একে একে খুলে দেখাল সে তার স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করলেন তুমি এতগুলাে নতুন পােশাক কিভাবে পেলে ? স্ত্রী জানালো - একজন অপরিচিত লােক তাদের বাড়িতে আসে এবং ঈদ করার পণ্যসামগ্রীসহ এ পােশাকগুলাে তার হাতে তুলে দিয়ে বলে, তােমার স্বামী যেখানে খেদমত করছে ; সে বাড়ি আসলে বলবে - আরাে ভালাে করে খেদমত করতে, তবে তােমাদেরকে আরাে বেশি দেয়া হবে। যেখানে সে নতুন পােশাক কিনলে এক সেট কিনেন, সেখানে মাের্শেদের মাধ্যমে আল্লাহর উপর ভরসা করার ফলে, সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিতভাবে মাের্শেদ কেবলাজান ৫ / ৬ সেট নতুন পােশাকের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।শুধু তাই নয়, ঈদ করার জন্য যা কিছু প্রয়ােজন, তিনি সবকিছুর ব্যবস্থা করেছেন। ঐ বছর তার পরিবারে ঈদের আনন্দ ছিল অকল্পনীয়। ঈদের খাবার দাবার কোন কিছুরই কমতি ছিল না। আর এ সবই সে লাভ করেছে আল্লাহর বন্ধুর দরবার শরীফে খেদমত করে তার মাধ্যমে আল্লাহর উপর নির্ভরশীল হওয়ার কারণে।

মহান দয়াময় প্রভূ দয়া করে তার অলী বন্ধুকে চিনার ও তার অনুগত হয়ে চলার তৌফিক ভিক্ষা দিন। আমিন।

বৃহস্পতিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

অলৌকিকঃ মন্দিরে মূর্তি ইসলামের সাক্ষী দেওয়ায় অসংখ্য হিন্দুদের ইসলাম গ্রহণ।


রামদেব ও অজয় পাল প্রমুখ বিশিষ্ট লােকগণ ইসলাম গ্রহণ করার ফলে আজমীরের হিন্দুগণ মুসলমানদের উপর অত্যধিক ক্ষুব্ধ হইয়া উঠল ও চরমভাবে ক্ষেপে গেল। তারা মুসলমানদের আনা সাগর হতে পানি নিতে ও আনা সাগরের তীর দিয়ে চলাফেরা করতে বাধাদান করতে লাগল।

একদিন খাজা সাহেবের জনৈক সহচর দেব মন্দিরের নিকটবর্তী রাস্তা দিয়ে যাবার সময় পূজারী ব্রাহ্মণগণ তাহাকে যথেষ্ট অপমান ও অপদস্থ করলেন। অতঃপর তিনি খাজা সাহেবকে এ অপমানের কথা জানালেন। খাজা সাহেব কোনরূপ মন্তব্য না করে নিজেই একা গিয়ে মন্দিরের সামনে উপস্থিত হলেন ।পূজারীগণ মুসলমানদের আন্তরিকভাবে ঘৃণা ও শত্রু মনে করলেও খাজা সাহেবকে কেউ কিছু বলিতে সাহস পাইল না। কারণ এ পর্যন্ত তার দ্বারা সংঘটিত কার্যকলাপগুলি প্রত্যক্ষ করে তারা সকলেই তাকে অত্যন্ত ভয় করতেছিল।

হযরত খাজা সাহেব মন্দিরের নিকট উপস্থিত হইয়া পূজারী ব্রাহ্মণদের বললেন, তােমরা তােমাদের সৃষ্টিকর্তাকে ছেড়ে নিজের হাতে নির্মিত মূর্তির পূজা কর কেন? তারা উত্তরে বলে, আমরা এদের পরম আরাধ্য সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বর বলেই পূজা করি। খাজা সাহেব বললেন, যদি তােমরা সত্য সত্যই তােমাদের উপাস্য সৃষ্টিকর্তা বলে বিশ্বাস কর এবং ইহা যদি সত্যই তােমাদের উপাস্য হয়ে থাকে তাহলে এদের নিকট কিছু প্রার্থনা কর। যদি তারা দিতে সক্ষম হয়, তবে বুঝবে যে, সত্যই ইহা উপসনার যােগ্য। ব্রাহ্মণগণ বলল, এরা প্রকাশ্যভাবে কারও কোন প্রার্থনা পূরণ করে না। যেমন আপনারা যার নাম নিয়ে আযান দেন, যার জন্য নামায পড়েন, আপনাদের প্রতি তারা প্রকাশ্যে কোন সাহায্য বা সহযােগিতার প্রমাণ দেখাতে পারেন। যদি পারেন তবে আমাদেরকে তার প্রমাণ দেখান। হযরত খাজা সাহেব বললেন, এইরূপ প্রমাণ বহুত আছে, প্রয়ােজনে তা অবশ্যই দেখাতে পারি। তবে তার পূর্বে আমাদের ধর্ম কিরূপ সত্য ও আমাদের উপাস্য সৃষ্টিকর্তা কতবড় শক্তিশালী তার প্রমাণ দেখ। অতঃপর তিনি মন্দিরের প্রধান দেবমূর্তিকে আহ্বান করিয়া বললেন, যদি আমার ধর্ম ইসলাম এবং আমার প্রতিপালক আল্লাহ ও আমার রাসূল সত্য হন তবে তুমি আমার আল্লাহর আদেশে তাহাদের সত্যতার সাক্ষ্য প্রদান কর। আল্লাহ তায়ালার কি অপূর্ব মহিমা তৎক্ষণাৎ প্রস্তর মূর্তিটি বাকশক্তি লাভ করে স্বস্থান হতে একটু অগ্রসর হয়ে এসে বলে উঠলো, আপনার ধর্ম ইসলাম এবং আপনার উপাস্য আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূল পরম সত্য এবং আপনি সত্যিই আল্লাহর আদেশে এই স্থানে সত্য ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে আগমন করেছেন। আমি সত্য সত্য সাক্ষ্য দিচ্ছি ‘ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ ' অর্থাৎ একমাত্র আল্লাহ ব্যতীত আর কোন উপাস্য নাই এবং হযরত মুহাম্মদ (সঃ) তাঁহার প্রেরিত পুরুষ। আর আমি ইহাও সাক্ষ্য দিতেছি যে, আমার উপাসকগণের ধর্ম মিথ্যা ব্যতিত কিছুই না। নিজেদের উপাস্য দেবমূর্তির মুখে এরূপ বাক্য শুনিয়া পূজারী পুরােহিতগণসহ উপস্থিত সকল হিন্দুগন বিস্মিত হইল এবং তারা ইসলামের সুশীতল ছায়ায় আশ্রয় নিল। কথিত আছে এই কারামতি দেখে ঐ গ্রামের প্রায় ১৪০০ হিন্দু মুসলমান হয়ে গিয়েছিল।

অলৌকিকঃ আজমিরে অবস্থান করেই মক্কায় গিয়ে হজ্জ পালন করেছেন খাজা মইনুদ্দিন চিশতি (রহঃ)।


অলি-আল্লাহগণ একই সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে পরিভ্রমণ করতে পারেন। সাধারণ মানুষের কাছে যা চিন্তার বাইরে অলি- আল্লাহগণের নিকট তা বাস্তব।বিভিন্ন অলি-আল্লাহ গনের জীবনে এমনটি ঘটেছে ও বর্তমানেও ঘটছে। এমনি একটি ঘটনা উল্লেখ করা হলোঃ

কোনও এক সময় আজমীর হতে কিছু ধর্মপ্রাণ লােক পবিত্র হজ্জ পালনের জন্য মক্কা শরীফে গমন করেন। তারা পবিত্র কাবাগৃহ প্রদক্ষিণ করার সময় দেখতে পান যে, খাজা সাহেব (রহঃ) ও তাদের সাথে কাবা গৃহ তাওয়াফ করছেন। কাবাগৃহ প্রদক্ষিণ কালে দুনিয়াবী কোন কথাবার্তা বলা নিষেধ। এজন্য তারা খাজা সাহেব (রহঃ) এর সাথে কোনো কথা বলেন নাই । কিন্ত তার তালবিয়া পাঠ তারা নিজের কানে স্পষ্টভাবে শুনেছেন। হজ্জের বাকী হুকুম আহকাম প্রতিপালন করার সময় তারা খাজা সাহেব (রহঃ) কে আর কোথাও দেখলেন না । তাকে না দেখে তারা বেশ চিন্তায় পড়ে গেলেন। অবশেষে হজ্জ কার্য শেষ করার পর তারা পুনরায় আজমীরে ফিরে আসেন এবং দেখেন যে, খাজা সাহেব (রহঃ) আজমীরেই অবস্থান করছেন। এই ব্যাপারে তারা খাদেমদের জিজ্ঞাসা করেন। তারা উত্তরে জানান যে, খাজা সাহেব (রহঃ)। এই বছর হজ্জ করতে মক্কা শরীফে গমন করেন নাই । এতে তারা আরও বিস্ময়াভিভূত হয়ে পড়েন। ইহাও কি সম্ভব ! খাজা সাহেব ( রহঃ ) হজ্জ করতে যান নাই অথচ তিনি আমাদের সাথে খানায়ে কাবা তাওয়াফ করছেন। আমরা তার মুখের কথাও স্পষ্ট শুনেছি।
অবশেষে তারা বুঝতে পারলেন অাল্লাহর অলিগন একই সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন স্থান পরিভ্রমণ করতে পারেন এবং তার অনুসারীদের বিপদেও সাহায্য করতে পারেন।

বুধবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

অলৌকিকঃ ১ বছরের বাছুর হতে দুগ্ধ দোহন।


একবার হযরত খাজা গরীব নেওয়াজ (রহঃ) কিছু সহচরসহ আজমীর প্রান্তর এলাকায় পরিভ্রমণ করতে ছিলেন। তিনি ঘুরতে ঘুরতে একটি চারণ ভূমিতে উপস্থিত হলেন। তিনি সেখানে দেখতে পান একজন রাখাল একটি বাছুরকে নির্দয়ভাবে লাঠি দিয়ে মারছে। আর বাছুরটি অসহ্য যন্ত্রণায় ছটফট করছে। এই করুণ দৃশ্য দেখে খাজা সাহেব (রহ) এর মনে দয়া হলো। তিনি রাখালকে ডেকে বললেন ‘ভাই রাখাল ! এই অল্প বয়সের বাছুরটিকে এমন নির্দয়ভাবে প্রহার করছো কেন ? তােমার এই নিদারুণ প্রহারের ফলে ইহার দুধ শুকিয়ে যাবে। ' রাখাল বালকটি হাতের লাঠি ফেলে দিয়ে সবিস্ময়ে বলল - এ আপনি কি বলছেন ? এক বছরের বাছুরের বাঁটে কখনও দুধ হয় নাকি? আপনার মাথা ঠিক আছে তো? খাজা সাহেব (রহঃ) তাহার বিস্ময়ভাব দেখে মৃদু হেসে বলেন- প্রিয় বৎস! বকনা বাছরের দুধ হওয়া কোন অস্বাভাবিক ব্যাপার না। তুমি দোহন করে দেখ, অবশ্যই এর দুধ হবে এবং আমিও ইহার দুধ পানে আগ্রহী। খাজা সাহেব (রহঃ) এর কথা শুনিয়া রাখাল বালকটির কৌতুহল আরও বেড়ে গেল । সে তখন দুধ দোহনের পাত্র যােগাড় করে বাছুরটির বাটে হাত দিতেই দুধ পড়তে লাগল । দেখতে দেখতে আর কয়েকটি পাত্র দুধে পূর্ণ হয়ে গেল। খাজা সাহেব (রহঃ) ওখান থেকে নিজে কিছু দুধপান করলেন এবং উপস্থিত সবাই পরম তৃপ্তি সহকারে দুধপান করল। তাঁর এই কারামত দেখে অনেক লােক সেইদিনই তাহার হাতে হাত রেখে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে ধন্য হলো।

মঙ্গলবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

হযরত রাসূল (সঃ) এর মোযেজাঃ দুটি উট ও একদল লোকের ইসলাম গ্রহণ।


বনী মুসতালিকের যুদ্ধে বিজয় লাভের পর হযরত রাসূল (সঃ) গণীমতের মালামাল ও বন্দীদের নিয়ে মদীনায় রওয়ানা হলেন। সাথীদের নিয়ে যখন মদীনাভিমুখে যাত্রা করলেন, তখন তার সাথে যুদ্ধ বন্দিনী বনী মুসতালিকের সরদারের কণ্যা জুয়াইরিয়া বিনতে হারিসও ছিল। তিনি জুয়াইরিয়া হারিসকে জনৈক আনসারের হেফাজতে আমানত স্বরূপ পাঠিয়ে দিলেন এবং তাকে সসম্মানে থাকার ব্যবস্থা করতে বলেন। এদিকে বন্দী কণ্যার পিতা হারিস বিন আমি জিরার মুসলমানদের হাতে বন্দিনী কন্যাকে ছাড়িয়ে নেয়ার জন্য মদীনা যাত্রা করল।

পথিমধ্যে 'আকিক' নামক উপত্যকায় পৌছানোর পর সেই উটগুলো হতে দুটো সুন্দর উটকে আকিক উপত্যকার একটি গিরিপথে লুকিয়ে রাখলো এবং বাকী উটগুলাে নিয়ে হযরত রাসূল (সঃ) - এর দরবারে হাজির হয়ে বললো। “হে মুহাম্মদ ! আপনি আমার কন্যাকে বন্দী করে রেখেছেন। আমি কণ্যার মুক্তিপণস্বরূপ এ উটগুলাে দিচ্ছি। হযরত রাসূল (সঃ) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, আকিক উপত্যকার গিরিপথে তুমি যে উট দু 'টি রেখে এসেছে সেগুলাে কোথায়? হারিস একথা শােনা মাত্রই অবাক হয়ে গেলেন। কেননা একথা সে ছাড়া কেউ জানার কথা নয়। এরপর সে বলল, আল্লাহর কসম ! আপনি সত্যিই আল্লাহর রাসূল। অতঃপর তিনি লােক পাঠিয়ে সে উট দু 'টোও আনালেন এবং কন্যাকে মুক্ত করলেন এবং দুই পুত্র কন্যা জুয়াইরিয়া ও কওমের অনেক লােকসহ ইসলাম গ্রহণ করলেন।

অতঃপর হযরত রাসূল (সঃ) জুয়াইরিয়ার বিয়ের প্রস্তাব দিলে পিতা তার কন্যাকে চারশ দিরহাম মােহরানায় হযরত রাসূল (সঃ) - এর সাথে বিয়ে দিলেন।

অলৌকিকভাবে তিনশ লোকের রান্না করা খাবারে আটশ লোকের খাদ্য গ্রহণ।


আশেকে রাসূল আবদুল মান্নান মাষ্টার, তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলার অধিবাসী। ২০১০ সালের ১১ জানুয়ারি তিনি তার বাড়িতে আশেকে রাসূল (সঃ) মিলাদ মাহফিলের আয়ােজন করেন। উক্ত মাহফিলে 'তিনশ’ লােকের তাবারুকের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু অপ্রত্যাশিতভাবে মাহফিলে 'আটশ' লােকের সমাগম হয়। এমতাবস্থায় তিনি তখন মােরাকাবায় তার মহান মাের্শেদ যুগের ইমাম সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মাঃ আঃ) হুজুর কেব্‌লাজানের শরণাপন্ন হন এবং তার উসিলা ধরে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করেন। অতঃপর আল্লাহ ও আল্লাহর বন্ধুর দয়া পাওয়ার আশায় দেওয়ানবাগ শরীফে মানত করেন। তারপর যথাসময়ে তাবারুক বিতরণ শুরু করেন। মহান রাব্বুল আলামীনের অপার দয়ায় খাবারে অবারিত বরকত হয় এবং উপস্থিত 'আটশ' লােকের প্রত্যেকেই ঐ তাবারুক আহার করে ।বরকতের মাত্রা এতই বেশি ছিল যে, তিনশত লােকের জন্য রান্না করা খাবার প্রায় তিনগুণ লােকে খেয়েছিল, অথচ একজন মানুষের আহারেও ঘাটতি হয়নি। তিনি পরবর্তী শুক্রবার আল্লাহর বন্ধুর কদম মােবারকে এসে আল্লাহর শুকরিয়া জ্ঞাপন করেন এবং মানত আদায় করেন।

অলৌকিকভাবে বিরিয়ানি ও ফলমূল প্রাপ্তি।


আশেকে রাসূল মশিউর রহমান (সুমন), চাদপুর জেলার অধিবাসী। তিনি ঢাকার আরামবাগস্থ বাবে কুতুবুল আকতাব ভবন। নির্মাণের সময় খেদমত করছিলেন। তার সাথে আরাে একজন জাকের ভাই ছিলেন। তারা মাের্শেদের দরবারে আজিজির সাথে খেদমত করছিল। তবে সমস্যা হল তাদের খাওয়া দাওয়া নিয়ে। সকালের নাস্তা , দুপুরের খাবার ও রাতের খাবার যখনই দেয়া হতাে, তখন তারা খেদমতে ব্যস্ত থাকত। কেন যেন দেরী হয়ে যেত।দেখা যেত, বাবে রহমতে যখন খাবার খাওয়ানাে হয়, তখন তাদের হাতে অনেক কাজ অগােছালাে থাকে।এমনিভাবে তাদের খাওয়াই হচ্ছিল না। এদিকে তাদেরকে চালের বস্তা নিয়েও নবম তলায় উঠাতে হত। তার সাথের জাকের ভাই বলল - দুদিন হলাে খেদমত করছি, কিন্তু খাবারই পাচ্ছি না। সে বলল - না খেলে আমরা কিভাবে কাজ করছি। মালিক তাে চালিয়ে নিচ্ছেন, তাই ? যাই হােক এভাবে দুদিন পার হয়ে গেল। রাতের বেলায় অন্য সকল জাকের ভাইদের সাথে তারা দু 'জন বাবে রহমতের মসজিদে শুয়ে আছে। এ সময় ঐ জাকের ভাই আবার খাবারের ব্যাপারে কথা বলতে শুরু করল। সে বলল , মালিক যখন রিজিকের ব্যবস্থা করবেন, তখন এমনিই খেতে পারব। রাত আড়াইটার দিকের ঘটনা।আওলাদে রাসূল, কুতুবুল আকতাব, দুররে মাকনুন, খাতুনে জান্নাত হযরত দয়াল মা (রহঃ)। তিন তলার বাসা মােবারক থেকে একটি ছােট ছেলেকে দিয়ে পর্যাপ্ত বিরিয়ানি পাঠিয়ে দিয়েছেন। যে ছােট ভাইটি খাবার নিয়ে নিচে এসেছে, সে বলছে - কে খাবার খাবেন? নিচে তখন পঞ্চাশ থেকে ষাট জন জাকের ভাই ঘুমিয়ে ছিল। কিছু ভাই জাগ্রতও ছিল। কিন্তু আশ্চর্য ব্যাপার কেউ রাজি হলাে না। অবস্থাদৃষ্টে পরিষ্কার বােঝা যাচ্ছিল যে, মহান আল্লাহ দয়া করে তাদের জন্য খাবার পাঠিয়ে দিয়েছেন। তিনি তখন তার সাথের ভাইকে বলল - 'এবার খাও, মালিকের পক্ষ থেকে খাবার চলে এসেছে। তখন তারা দু 'জন দয়াল মার পাঠানাে বিরিয়ানি তৃপ্তির সাথে খেল।জীবনে এত বিরিয়ানি খেয়েছি কিন্তু এমন স্বাদের খাবার আর কোন দিন খাইনি।' ঘটনা এখানেই শেষ নয়, বিরিয়ানি খেয়ে তখনও শেষ করতে পারেনি।ইত্যবসরে ছােট্ট ঐ জাকের ভাই তিন তলার বাসা মােবারক থেকে আমাদের জন্য ঝুড়ি ভর্তি কয়েক প্রকার ফল নিয়ে আসে এবং বলে এগুলাে দয়াল মা আপনাদের জন্য পাঠিয়েছেন। ফলগুলাে দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি সুস্বাদু, তারা দু 'জন খেতে শুরু করল। কিন্তু শেষ করতে পারল না, তার পূর্বেই তাদের পেট পুরােপুরি ভরে যায়। তখন আল্লাহ ও আল্লাহর বন্ধুর প্রতি কৃতজ্ঞতায় তাদের অন্তর ভরে উঠে। রাত আড়াইটার সময় ক্ষুধায় যখন তাদের ঘুম আসছে না, তখন এ ক্ষুধার খবর জগতের কেউ না রাখলেও আল্লাহ ও আল্লাহর বন্ধু ঠিকই রেখেছেন।হে দয়াময় খােদা ! লাখাে শােকর আপনার নুরের কদম মােবারকে।”

শনিবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী (মাঃ আঃ) হুজুরের উসিলায় অলৌকিক বৃষ্টিপাত।


মহান সংস্কারক মােহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহবুব - এ - খােদা দেওয়ানবাগী (মাঃ আঃ) হুজুর কেবলাজানের জ্যেষ্ঠ সাহেবজাদা প্রফেসর ইমাম ড. সৈয়দ এ. এফ. এম. নূর-এ- খােদা আল আযহারী (মাঃ আঃ)। যিনি দেওয়ানবাগ শরীফের মহা-পরিচালক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। ঘটনাটি ২০০৯ সালের ১১ জুন, বৃহস্পতিবারের। তার মহান মাের্শেদ ও পিতা যুগের ইমাম সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মাঃ আঃ) হুজুরের নির্দেশে উনারা ভাই-বােন ও হযরত দয়াল মা (রহঃ) ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলাধীন বাবে মাের্শেদ দেওয়ানবাগ শরীফে সফর করেন। এ সফর ছিল উনাদের পরম শ্রদ্ধেয় দাদাজান আলহাজ্ব সৈয়দ আবদুর রশিদ সরকার (রহঃ) এবং দাদীজান হযরত সৈয়দা জোবেদা খাতুন (রহঃ) - এর ওফাত বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যােগ দেয়ার উদ্দেশ্যে। তাদের লক্ষ্য ছিল, তারা এক সপ্তাহ সেখানে থাকবেন। কিন্তু ওখানে গিয়ে দেখেন প্রচণ্ড গরম। গরমে সবাই অতিষ্ঠ। ঢাকায় তাদের সকলের এসিতে থাকার অভ্যাস, কিন্তু সেখানে তাে সেই ব্যবস্থা নেই। প্রচণ্ড গরমে অবস্থা এতটাই ভয়াবহ হয় যে, কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ে। এদিকে চৈত্রের তাপদাহে পােকার অত্যাচারও বেড়ে গিয়েছিল। অবস্থা বেগতিক দেখে তারা পরের দিনই চলে আসব বলে মনস্থির করেন। তাদের এ অবস্থা লক্ষ্য করে আওলাদে রাসূল, কুতুবুল আকতাব, দুররে মাকনূন, খাতুনে জান্নাত হযরত দয়াল মা (রহঃ) ঢাকায় বাবাজানের কাছে ফোন করেন এবং তাদের সমস্যার কথা অবহিত করেন। অতঃপর আল্লাহর বন্ধুর কাছে দয়া চান, যেন একটু বৃষ্টি হয়, গরম ও পােকার অত্যাচার দূর হয়। তাদের কথা বলার দশ মিনিটের মাথায় হঠাৎ আকাশে মেঘের গর্জন শােনা গেল। মহান রাব্বুল আলামীন তার অলী বন্ধুর উসিলায় তৎক্ষণাৎ বৃষ্টি নামিয়ে দেন। মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হলাে। পুরাে এলাকা ঠাণ্ডা হয়ে যায়। প্রাকৃতিক পরিবেশ সম্পূর্ণ পরিবর্তন হয়ে যায়। এ উসিলায় অত্র এলাকার মাঠ-ঘাট, ফসলী জমিন সর্বত্র রহমতের ছোঁয়া লেগে যায় এ ঘটনায় তাদের মনে আনন্দের জোয়ার বয়ে যায়। ঘটনা এখানেই শেষ নয়, দয়াল বাবাজানের কাছে ফোন করার পর অবিশ্বাস্যভাবে সীমাহীন পােকার অত্যাচারও আল্লাহর রহমতে দূর হয়ে যায়।