মহান রাব্বুল আলামীন মানব জাতিকে হেদায়েত করার জন্য অনাদিকাল হতে এ পৃথিবীতে নবী, রাসূল ও অলী আল্লাহগণকে প্রেরণ করেছেন। তাদেরকে আল্লাহ তাঁর প্রতিনিধি নির্বাচিত করেছেন। নবুয়াতের যুগে বিপদগ্রস্ত মানুষ যখন বিপদে পড়ে তাঁদের কাছে সাহায্য চেয়েছেন তারা বিপদগ্রস্ত মানুষকে বিপদ থেকে উদ্ধার করেছেন। অনুরূপ ভাবে বেলায়েতের যুগেও বিপদগ্রস্ত মানুষ যখন বিপদে পড়ে অলী-আল্লাহর শরণাপন্ন হন, অলী-আল্লাহগণ তাদেরকে বিপদ থেকে উদ্ধার করেন। বর্তমান যুগে সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী ( মাঃ আঃ ) হুজুর কেবলাজান হলেন আল্লাহর প্রেরিত জগৎশ্রেষ্ঠ অলী-আল্লাহ। তিনি মানুষকে আল্লাহ ও হযরত রাসূল (সঃ) - এর নৈকট্য লাভের শিক্ষা দিয়ে থাকেন। সমাজের অনেক বিপদগ্রস্ত মানুষ তার কাছে এসে বিপদ থেকে উদ্ধার পাচ্ছেন। এমন বহু ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে। নিন্মে সুধী মহলের জ্ঞাতার্থে একটি ঘটনা উপস্থাপন করা হল।
ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়া উপজেলার বালাশর গ্রামের বাসিন্দা জনাব মােঃ খলিলুর রহমান। তার মেয়ের নাম মােছাঃ সামিরা আক্তার মুন্নি। সে তার বাড়ির পাশে দশমাইল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পড়তো। প্রতিদিনের মত মুন্নি সেদিন সকালে বাসা থেকে স্কুলের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। কিন্তু তারপর সে আর বাসায় ফিরে আসেনি। এদিকে তার বাবা - মা তার জন্য অপেক্ষায় ছিল। স্কুল থেকে বাসায় আসার সময় পাড় হয়ে যাচ্ছে দেখে জনাব খলিলুর রহমানের স্ত্রী তাকে বলল স্কুল থেকে একটু খোজ নিয়ে আসতে। জনাব খলিলুর রহমান তার স্ত্রীর কথা মত স্কুলে খোঁজ নিতে গেল। কিন্তু স্কুলে গিয়ে কাউকে সে পেল না। দেখল যে সবাই চলে গেছে, স্কুলে তালা লাগানাে। না পেয়ে ভাবল যে হয়ত তার কোন সহপাঠির বাসায় বেড়াতে গেছে। এদিকে সন্ধ্যা পার হয়ে রাত্রি হয়ে গেল কিন্তু তাদের মেয়ে আর ফিরে আসছে না। মেয়ে ফিরে না আসাতে বাড়ীর সবাই চিস্তায় অস্থির হয়ে গেল। তারা তাদের আত্মীয় স্বজন, মেয়ের সাথে যারা পড়াশােনা করে সবার বাসায়ই খোঁজ নিল, কিন্তু কেউই তাদের মেয়ের কোনো সন্ধান দিতে পারল না। সারারাত মেয়েকে সম্ভাব্য সব জায়গায় খুঁজে না পেয়ে সকালে তারা তাদের এলাকা ও আশে পাশে মাইকিং করে কিন্তু কোন লাভ হয়নি। এইভাবে কিছুদিন যাওয়ার পর মেয়ের ছবি সহ পােষ্টার ও লিফলেট বিতরণ করেন। এভাবে তাদের মেয়ের খোজে দিন অতিবাহিত হয় তাদের। তারা বিভিন্ন কবিরাজ এর স্মরণাপন্ন হয়। কিন্তু কেউ তাদের মেয়ের সঠিক খবর বলতে পারে না। কেউ আবার বলে মেয়ে মারা গেছে। একেক জনের একেক রকম কথা। এভাবে ৭টি মাস কেটে যায় তাদের। মেয়ের সন্ধানে কোন মাধ্যমই বাকি রাখেন নি। জনাব খলিলুর রহমান ও তার পরিবার- পরিজন। কিন্তু কোন সুফলই পাননি। যে জায়গাতেই মেয়ের সন্ধানে গিয়েছেন হতাশ হওয়া ছাড়া আর কিছুই জোটেনি খলিলুর রহমানের কপালে। এইভাবে মেয়ের আশা ছেড়েই দিতে চলেছিলেন।
কিন্তু ভাগ্যক্রমে জনাব খলিলুর রহমান এর সাথে কথা হয় সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মাঃ আঃ) হুজুর কেবলা এক ভক্ত অনুসারীর। তার নাম জনাব মােঃ তাজুল ইসলাম সাহেব। তাজুল ইসলাম ও খলিলুর রহমান সাহেব বাসের মধ্যে পাশাপাশি সিটে বসে কথা বলছিলেন। এমন সময় খলিলুর রহমান সাহেব তার মেয়ের প্রসঙ্গ টানেন। খলিলুর রহমান সাহেব বলেন আজ থেকে ৭মাস আগে আমার মেয়ে হারিয়ে যায়। অনেক খােজা খোজি করছি কোথাও পাচ্ছিনা। চেষ্টার কোন কিছুই বাকি রাখি নাই। অনেক কবিরাজ এর কাছে গেছি কিন্তু কেউ আমার মেয়ের কোন সন্ধানই দিতে পারছেনা। এখন আমার মেয়ে বেঁচে আছে না মরে গেছে, তাও নিশ্চিত হতে পারছি না। কোথায় গেলে এখন আমি আমার মেয়েকে খোঁজে পাব এই বলে খলিলুর রহমান সাহেব কেঁদে উঠলেন। তার কথা শুনে জনাব তাজুল ইসলাম সাহেব বললেন আপনি যদি আমার মহান মাের্শেদ সূফী ম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী ( মাঃ আঃ ) হুজুর কেবলার কাছে যান আর তিনি যদি দয়া করেন, তাহলে আপনার মেয়ে কিছু দিনের মধ্যেই আপনার ঘরে ফিরে আসবে। আপনার আর এত খােজ খবর নিতে হবে না। তাজুল ইসলাম সাহেবের কাছে আশার এই বাণী শুনার পর সে সাথে সাথে নিয়ত করলেন যে সূফী সম্রাটের দরবারে যাবেন এবং গাড়িতে বসেই সূফী সম্রাটের দরবারে শরীফে মানত করলেন। কিন্তু হরতাল ও অবরােধের কারণে তার আর সুফী সম্রাটের দরবার শরীফ ঢাকায় আসার সুযােগ হয়নি। তিনি তাজুল ইসলামের কথা মত সূফী সম্রাটের উপর বিশ্বাস করে তার মেয়ের সন্ধান করা বাদ দিলেন। তাজুল ইসলাম সাহেবের সাথে কথা হওয়ার দুই সপ্তাহ পর হঠাৎ একদিন দুপুরে তার মা ঘরের ভিতর দেখে যে তাদের মেয়ে খাটের উপর বসে আছে। মেয়েকে দেখে তার বিশ্বাসই হচ্ছিল না যে তার মেয়ে ফিরে এসেছে। সে তার মেয়ের কাছে যায়, মেয়েও তার মাকে দেখে মা বলে কাছে যায়। তার মা তার মেয়েকে কাছে পেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। ৭ মাস পর হারানাে মেয়েকে কাছে পেয়ে বিশ্বাসী হচ্ছিল না তার। তারপর সে বাড়ির সবাইকে ডেকে বলছিল তােমরা কে আছ আমার মেয়েকে দেখে যাও আমার মুন্নি ফিরে এসেছে। এ কথা শুনে বাড়ির সবাই ভাল যে, মেয়ের শােকে হয়ত সে পাগল হয়ে গেছে। তারপরও দুই একজন বের হয়ে দেখে যে সত্যি সত্যি ফিরে এসেছে। ৭ মাস পর ফিরে এসেছে দেখে বাড়ির সবাই অবাক হয়ে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই মুন্নিকে দেখতে এলাকার লােকজন এসে বাড়িতে ভিড় জমায়। বাবা মা আত্মীয় স্বজন হারানাে মেয়েকে কাছে পেয়ে খুশিতে আত্মহারা। এদিকে দিয়ে মুন্নির কাছে সবাই জানতে চায় যে, সে এতদিন কোথায় ছিল? কার কাছে ছিল? আবার কিভাবেই বা ফিরে আসল? মুন্নি বলে যে আমি এইসব কিছু বলতে পারি না। বার বার একই প্রশ্ন করা হলে সে বলে যে সে কিছুই বলতে পারে না।
অবশেষে জনাব খলিলুর রহমান সাহেবেরও তার স্ত্রীর বুঝতে আর বাকি রইলনা যে তাদের মেয়ে সূফী সম্রাটের দয়ার বদৌলতেই ফিরে এসেছে তা না হলে সাত মাস এত খোজাখুজির করা হল কোথাও পাওয়া গেল না। আর সূফী সম্রাটের দরবারে মানত করার দুই সপ্তাহের মাথায় তাদের মেয়ে ঘরে এসে বসে আছে এটা সূফী সম্রাটের দয়া ছাড়া অন্য কিছুই না। অতঃপর পরিবারের সবাই সূফী সম্রাটের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। পরে দরবার শরীফে মানত আদায় করতে এসে ঘটনার বর্ণনা করেন। এই রকম একজন দুইজন নয়, প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ আল্লাহর মহান বন্ধু সূফী সম্রাটের কাছ এসে বিপদ থেকে উদ্ধার পাচ্ছেন। আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ তিনি যেন দয়া করে সারাবিশ্বের মানুষকে তার এই মহান বন্ধুর পরিচয় নসিব করান। আমীন।