হযরত আবু সাঈন সাদ ইবনে মালেক ইবনে সিনান আল - খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত - তিনি বলেন, হযরত রাসুল (সঃ) এরশাদ করেন - পূর্ববর্তী যুগে এক ব্যক্তি ৯৯ জন মানুষকে হত্যা করে, অতঃপর সে মুক্তির সন্ধানে দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ আলেমের সন্ধান করলাে। তখন ছিল ঈসায়ী ইসলামের যুগ। ফলে তাকে খ্রিস্টান ধর্মের একজন হুজুরের সন্ধান দেয়া হলাে। মুক্তি পাগল লােকটি বড় আশা নিয়ে ঐ আলেমের দ্বারস্থ হয়ে আরজ করলাে - হযরত ! আমি ৯৯ জন মানুষকে খুন করেছি। এখন আমার জন্য তওবা করার কোনো সুযােগ আছে কি? জবাবে ঐ হুজুর বললো, না তােমার জন্য তওবার দরজা খােলা নেই, এতগুলাে খুন করার পরও যদি আল্লাহ তোমাকে মাফ করেন, তবে তিনি জাহান্নামে দেবেন কাকে? এতে লােকটি ক্রোধান্বিত হয়ে খ্রিস্টান ধর্মের ঐ হুজুরকেও হত্যা করে ১০০টি খুন পূর্ণ করল, লােকটি ভাবলো, যেহেতু আমার আর মুক্তির আশা নেই, সুতরাং এ হুজুরকে বাঁচিয়ে রেখে আর লাভ কি?
এ পর্যায়ে লােকটি মুক্তির নেশায় পাগলের মত ছুটাছুটি শুরু করল। এবার সে আল্লাহ তত্ত্বের জ্ঞানে জ্ঞানী একজন দরবেশের দেখা পেলেন তিনি তাকে বললেন, আমি ১০০ জন লােককে হত্যা করেছি ।এখন আমার জন্য তওবার পথ খােখোলা আছে কি? জবাবে আলেম বললেন - হ্যা, তােমার জন্য তওবার সুযােগ আছে, আল্লাহ যদি আছতোমাকে ক্ষমা করে আল্লাহর তো কোনো লোকসান হবে না বা কাউকে কৈফিয়ত দিতে হবে ,না। আলেম তাকে পরামর্শ দিলেন - 'তুমি অমুক স্থানে যাও। সেখানে কিছু সংখ্যক সুফী - সাধকেরা এক পবিত্র মজলিসে রয়েছে। তাঁরা ইবাদত - বন্দেগী বা সাধনারত আছেন। তুমিও তাদের সােহবত লাভ করে সাধনায় রত হও। কখনােই দেশে ফিরে এসাে না। লোকটি ক্ষমা পাওয়ার আশায় ঐ মজলিশের উদ্দেশ্যে ছুটে চললো নির্দিষ্ট স্থানের অর্ধেক পথ চলার পর সে মারা গেল। তখন রহমতের ফেরেশতা এবং আযাবের ফেরেশতা বিতর্কে লিপ্ত হলো। রহমতের ফেরেশতাগণ বললেন, লােকটি তওবা করে আল্লাহর দিকে ফিরে এসেছে। অন্যদিকে আযাবের ফেরেশতাগণ বললেন, লােকটি কখনাে কোনাে ভাল কাজ করেনি। বিতর্ক যখন চরমে পৌঁছে গেল, তখন মানব রূপ ধারণপূর্বক একজন ফেরেশতা উপস্থিত হলেন সবাই তার সালিশ মেনে নিল। তবে ভিন্ন বর্ণনায় এসেছে , এ সময় রহমতের ফেরেশতাগণ ও আযাবের ফেরেশতাগণ এ দ্বন্দ্বের ফয়সালার জন্য আল্লাহর হুজুরে হাজির হন। অতঃপর মহান আল্লাহ নির্দেশ দেন, তােমরা উভয় দিকের রাস্তার দূরত্ব মেপে দেখ, সে তার যাত্রা পথের কোন অংশ বেশি অতিক্রম করেছে যে দিকটি নিকটতম হবে সে এরই উপযুক্ত। রাস্তার দূরত্ব পরিমাপের পর দেখা গেল লােকটি যেদিকে উদ্দেশ্য করে যাচ্ছিল সেদিকটিই নিকটে। সূফীদের বর্ণনা থেকে জানা যায়, ফেরেশতাগণ রাস্তার দূরত্ব পরিমাপের পূর্বেই আল্লাহ লক্ষ্য করলেন, তাঁর প্রিয় বান্দাদের মজলিশের অর্ধেক পথে তার মৃত্যু হলেও সে এক বিঘত পেছনে রয়ে গেছে। এ সময় মহান আল্লাহ তাঁর অলী - বন্ধুদের উছিলায় লোকটির প্রতি দয়া পরবশ হলেন।তিনি গাফুরুর রাহীম নামের মহিমা প্রকাশ করে জমিনকে নির্দেশ করলেন, হে জমিন ! তুমি আমার বান্দাকে আমার অলী - বন্ধুদের মজলিশের দিকে এক হাত এগিয়ে দাও। মুহূর্তেই জমিন আল্লাহর নির্দেশ পালন করে। অতঃপর ফেরেশতাগণ রাস্তার দূরত্ব পরিমাপ করে দেখতে পান, লােকটি ক্ষমা পাবার উদ্দেশ্যে অলিদের মজলিশের দিকে অগ্রসর হছিল সে দিকটিই অধিক নিকটবর্তী। ফলে রহমতে ফেরেশতাগণ লােকটির রূহকে ইল্লিন নামক শান্তিময় স্থানে নিয়ে যান।
এভাবেই মহান দয়াময় আল্লাহ তায়ালা মানুষকে তার অলি বন্ধুদের উসিলায় ক্ষমা করে থাকেন, তাই আসুন আমরা যুগশ্রেষ্ঠ মহামানব সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মাঃ আঃ) হুজুর কেবলাজান এর উসিলা ধরে মহান আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাই। তিনি মহান ও দয়াময়।