Translate

সোমবার, ১৮ মার্চ, ২০১৯

সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী হুজুর কেবলাজানের দয়ায়- নুরু হাজী অঢেল ধন-সম্পদের মালিক হলেন।

আশেকে রাসূল হাজী মােঃ তুহিনূর রহমান (নুরু)। পিতা - মৃত হাজী মােঃ রহমত আলী, রাজধানী ঢাকার ৩০৯ / এ দক্ষিণ যাত্রাবাড়ির অধিবাসী। আল্লাহ ও আল্লাহর বন্ধুর অপার দয়ায় ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় তাকে অনেকেই 'নুরু হাজী' নামে চেনেন। তিনি ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দে মহান সংস্কারক যুগের ইমাম সুফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মাঃ আঃ) হুজুর কেবলাজানের কাছ থেকে মােহাম্মদী ইসলামের সবক গ্রহণ করেন। তিনি ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের ২১ মার্চ সােমবার বাবে রহমতে এসে এ ঘটনা বর্ণনা করেন, তার জীবনে ঘটে যাওয়া অবিশ্বাস্য এ অলৌকিক ঘটনাটি ১৯৮৭ সালের মার্চ মাসের। ঘটনাটি ছিল এ রকম তিনি তার নিজের ভাষায় বলেন - আমি তখন ২৫ বছর বয়সী যুবক। ঢাকার স্থানীয় অধিবাসী হওয়ায় আমার অনেক বন্ধু ছিল, যাদের অনেকেই অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্যে একে একে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, আমেরিকায় চলে যাচ্ছিল। আমিও বিদেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ছিলাম। অতঃপর টাকা সংগ্রহের উদ্দেশ্যে আমার মায়ের একটি জমি দুই লক্ষ চল্লিশ হাজার টাকায় বিক্রি করলাম। মােটামুটি টাকা সংগ্রহ হয়ে গেলে আমি আমার মাের্শেদ যুগের ইমাম বাবা দেওয়ানবাগীর কাছে এসে, বিদেশে যাবার অনুমতি চেয়ে আল্লাহর বন্ধুর দয়া প্রার্থনা করি। তিনি বলেন - ঠিক আছে, চেষ্টা করেন, আর দেখেন আল্লাহ কি করেন ! তারপর আমি ও আমার বন্ধু সরোয়ার হােসেন স্বপন একসাথে পাসপাের্ট ও ভিসা প্রসেসিং সম্পন্ন করলাম। আর সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে সর্বশেষ যখন টিকেট ও ডলার ক্রয় করব, ঠিক তখনই আমি আমার বন্ধুকে নিয়ে মতিঝিলের আরামবাগে আসি। উল্লেখ্য, তখন মুর্শেদ কেবলাজান ১৫৪ আরামবাগে থাকতেন। উদ্দেশ্য যুগের ইমাম বাবা দেওয়ানবাগীর সাথে সাক্ষাৎ করে শেষ বারের মত দয়া চেয়ে নেয়া। এদিকে তার বন্ধু তার সাথে আসলেও দোতলায় উঠলাে না, সে বলল তুমি যাও দয়াল বাবাজানের কাছে আমি নিচে আছি। আমি দােতলায় চলে গেলাম। মহান মাের্শেদ যুগের ইমাম বাবা দেওয়ানবাগীকে কদমবুসি করার সাথে সাথে তিনি জিজ্ঞেস করলেন- কি নুরু মিয়া, কিছু বলবেন? আমি বললাম - বাবাজান, জাপানে যাওয়ার ব্যাপারে সব আয়ােজন সম্পন্ন করেছি, এখন টিকেট ও ডলার কিনতে যাব, আমাকে দয়া করেন। আমার এ কথা শুনে বাবাজান রাগ করলেন, ফলে আমি অনেকটা থ বনে গেলাম। বিষয়টি তিনি মােটেই পছন্দ করলেন না। অতঃপর বললেন - “ অর্থের জন্য বিদেশে যাবেন? বিদেশে আল্লাহ আছে দেশে আল্লাহ নেই? যিনি বিদেশে দিতে পারেন, তিনি দেশে দিতে পারেন না? যান মিয়া, বাসায় যান। আপনার বিদেশে যাওয়া লাগবে না। দেখেন, আল্লাহ কি করেন। ' মহান মাের্শেদের এরূপ নির্দেশের প্রেক্ষিতে আমি ভারাক্রান্ত হৃদয়ে দোতলা থেকে নিচে নেমে আসলাম। আমার বন্ধুকে বললাম আমি বিদেশে যাবাে না। তুমি যাও, অতঃপর তাকে বিদায় দিয়ে সােজা যাত্রাবাড়ীর বাসায় চলে গেলাম। বাসায় যাবার পর আমার বোনেরাসহ পরিবারের সকলেই বলতে লাগল - তােমাকে বিদেশে যেতে হবে না, তুমি বিদেশে যাবে না। কি আশ্চর্য ! এতদিন সবাই উৎসাহ দিয়েছে, আর এখন সবাই বাধা দিচ্ছে। অথচ বাবাজানের সিদ্ধান্তের বিষয়টি আমি তখনাে বাসায় কাউকে জানাইনি। অবস্থাদৃষ্টে মনে হছিল, আরামবাগ থেকে যাত্রাবাড়ীতে পৌছার পূর্বেই আল্লাহর বন্ধুর সিদ্ধান্ত আল্লাহ আমার পরিবারের লােকদের অন্তরে পৌছে দিয়েছেন!

যাই হােক বিদেশে গিয়ে অর্থ উপার্জনের মিশন এখানেই থেমে গেল। কিন্তু আল্লাহ যে বাংলাদেশেও আছেন ' - আল্লাহর বন্ধুর এ রহস্যময় বাণী মােবারকের তাৎপর্য আমি তখনাে বুঝতে পারিনি। আমি অনেকটা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে ঐ দিনই সন্ধ্যায় যাত্রাবাড়ার একটি মার্কেটের ২য় তলায় বসে আছি। হঠাৎ দেখি আমার এক ফুপাত ভাই হন্যে হয়ে আমাকে খুজছে। আমাকে দেখা মাত্রই বলল - তার পিতা অর্থাৎ আমার ফুপা আমাকে এখনই দেখা করতে বলেছে। ফুপার বয়স তখন ১১২ বছর। আমরা আগে থেকেই তাকে নিয়ে শংকিত ছিলাম। জানতে পারলাম তার শারীরিক অবস্থা ভালাে না। আমি তার কাছে ছুটে গেলাম। কিন্তু গিয়ে দেখলাম ঘটনা উল্টো। ফুপা৷ আমাকে বললেন - আমার একটা জায়গা আছে, তুমি এটি নিয়ে নাও। অামার টাকার খুব দরকার। ফুপা পাঁচ লক্ষ টাকা দাবী করলেও আমাকে মাত্র দু ' লক্ষ টাকায় জায়গা দিয়ে দিলেন। আমার কাছে তখন এক লক্ষ বারাে হাজার টাকা ছিল। আমি এক লাখ টাকা অগ্রিম দিয়ে। বাকী বারাে হাজার টাকায় বালু ভরাট করি। আশ্চর্যের ব্যাপার, মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে ঐ জমি বারাে লক্ষ টাকায় বিক্রি হয়ে যায়। এভাবেই আমি ব্যবসা - বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়ি। অতঃপর মহান আল্লাহ আমাকে একের পর এক ব্যবসায় সাফল্য দান করেন যা ছিল অকল্পনীয়।

এদিকে আরাে একটি ঘটনা ঘটেছিল। ব্যবসা শুরু করার কিছুদিন পর আমি মহান মাের্শেদ যুগের ইমাম বাবা দেওয়ানবাগীর সহবতে একটি শক্ত কাঠ নিয়ে হাজির হই। আমি তখন নিয়মিত শরীর চর্চা করতাম এবং মার্শাল আর্ট শিখতাম। তাই আমার হাতের বাহু, পেশীমূল খুব শক্ত করে বাবাজানকে অনুরােধ করি, বাবা ! আপনি যদি দয়া করে, আমার বাহুতে শক্ত করে একটি বাড়ি দেন আমার কিছুই হবে না।বাবাজান আমার ছেলেমানুষী দেখে মুচকি হেসে দিয়ে বললেন আমি বাড়ি দিলে তাে আপনার হাতের হাড় ভেঙ্গে যাবে। বললাম - বাবা ! আপনার দয়ায় ভাঙ্গবে না, দয়া করে আমাকে এ কাঠ দিয়ে একটি বাড়ি দেন না। আমার বার বার অনুরােধের প্রেক্ষিতে যুগের ইমাম বাবা দেওয়ানবাগী আমার বাহুতে একটি কাঠ দিয়ে আঘাত করেন। মুহূর্তেই আমি কদম মােবারক জড়িয়ে ধরে বলি বাবা, আমি শুনেছি আল্লাহর বন্ধু যদি কাউকে একটি ধমক দেয় কিংবা কোন প্রকারে কোন আঘাত করে তবে এতেও রহমত পাওয়া যায়। এর বিনিময়ে ঐ ব্যক্তির কোন মুসিবত দুর হয় অথবা ভাগ্য পরিবর্তন হয়ে যায় ।বাবা, আপনি তাে আমাকে এ শক্ত কাঠ দ্বারা আঘাত করেছেন, দয়া করে আমাকে কিছু দেন। মহান মাের্শেদ আমার কথা শুনে জিজ্ঞেস করলেন আপনি কি চান ? আমি বললাম বাবা আপনি আমাকে সম্পদশালী ধনী বানিয়ে দেন, আমার টাকা দরকার। বাবাজান বললেন - আপনি বরং আমার কাছে ঈমান চান, আল্লাহ আমাকে এ নিয়ামত দান করেছেন যে, আমি আপনাকে ঈমানের ধনে ধনী বানিয়ে দেই।আমি বললাম - বাবা ! অাপনার দয়ায় আমি আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূলকে বিশ্বাস করি। আপনি দয়া করে আমাকে টাকা - পয়সা দান করেন, তবে আমি খুবই উপকৃত হব। মহান মাের্শেদ দ্বিতীয়বার তাঁর কথার পুনরাবৃত্তি করলেন। কিন্তু এবারও আমি নাছােড়বান্দা ! অবশেষে তৃতীয়বার বাবাজান বললেন - ঠিক আছে, যান, আপনার অর্থ সম্পদ হবে।' মহান মাের্শেদের এ অমিয় বাণী মােবারক বুকে ধারণ করে আমি বাসায় চলে যাই। যুগের ইমাম বাবা দেওয়ানবাগীর অপার দয়ায় সেদিন থেকে আমি যেন আলাদীনের আশ্চর্য প্রদীপ হাতে পেয়েছি। যে ব্যবসায় আমি হাত দিয়েছি অকল্পনীয় সাফল্য অর্জন করেছি। এভাবেই আমার অভাব দূর হয়ে গেল। মহান আল্লাহ তাঁর বন্ধুর বরকতে আমাকে অঢেল ধন - সম্পদ দান করেছেন, আলহামদুলিল্লাহ্। আমার এ উন্নতি দেখে যাত্রাবাড়ীর স্থানীয় অনেক লােকেই তাদের নিজস্ব ভাষায় বলে থাকে নূরু হাজীকে দেওয়ানবাগী উঠাইয়া দিছে, সে যে ব্যবসায়ই হাত দেয়, তাতেই অর্থে লাল হয়ে যায়।কেউ কেউ বলে দেওয়ানবাগী নুরু হাজীকে এমন জিনিস দিয়েছে যে, সে ছাই ধরলে সােনা হয়ে যায়।তবে আসল বিষয় এই যে, মহান আল্লাহ যুগের ইমাম বাবা দেওয়ানবাগীর কারামত দ্বারা আমাকে বর্তমানে অঢেল ধন সম্পদের অধিকারী করেছেন।আমি আল্লাহ ও আল্লাহর বন্ধুর প্রতি চিরকৃতজ্ঞ।আর এ মহামানব কেবল আমার অভাবই দূর করেননি, তিনি আমার জীবনের আলােকবর্তিকা হয়ে আছেন। এ মহামানবের অসংখ্য অলৌকিক কারামত আমাকে সাহায্য করেছে, বর্তমানে এ স্তরে উন্নীত করেছে। মহান আল্লাহর নিয়ামত গণনা করে যেমন শেষ করা যায় না। তেমনি, আল্লাহর বন্ধুর অপার দয়া, মহিমা ও মহানুভবতার বর্ণনাও আমি শেষ করতে পারবাে না। হে দয়াময় খােদা ! তােমার এ তােমার বন্ধুর প্রতি আমি যেন চিরকৃতজ্ঞ ও আত্মসমর্পিত হয়ে থাকি। আমীন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন