Translate

মঙ্গলবার, ৮ জানুয়ারী, ২০১৯

'তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী' পাঠ করায় অফুরন্ত বরকত লাভ হলো।


মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বিশ্ব জাহানের সকল সৃষ্টির প্রতিপালক। তাঁর বাণী মোবারক পবিত্র কোরআন মানব জাতির জন্য এক মহামূল্যবান গ্রন্থ। এই বাণী মোবারক যার মুখের কথা, মানুষ সেই মহান আল্লাহকে নিরাকার বলে বিশ্বাস করে থাকে। যে মহান আল্লাহ মানুষের ভাল মন্দ সকল কর্ম দেখেন, মানুষের সকল কথা শোনেন, মানুষ সেই আল্লাহকে নিরাকার বলে জানে। মানুষের এই বিশ্বাসকে ভুল প্রমাণিত করে আল্লাহর বাণী কোরআন এবং রাসূল (সঃ) এর বাণী পবিত্র হাদীস দ্বারা যিনি আল্লাহর আকার প্রমাণ করলেন, তিনি হলেন যুগের ইমাম, মহান সংস্কারক, মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মাঃ আঃ) হুজুর কেবলাজান। তাঁর প্রণীত তাফসীর শরীফ 'তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী' যা ৮ খন্ডে রচিত। এই তাফসীর শরীফ দ্বারাই তিনি প্রমাণ করেছেন, আল্লাহ আকার। তিনি নিরাকার নন, তবে মহান আল্লাহ মানুষের মত রক্ত মাংসের দেহধারী নন, তিনি নূরের। সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মাঃ আঃ) হুজুর কেবলাজান তাফসীর প্রণয়ন করে মহান আল্লাহর আকার প্রমাণ করায়, আল্লাহ তায়ালা এই তাফসীর শরীফে অনেক রহমত ও বরকত দান করেছেন। এই তাফসীর শরীফ অধ্যয়ন করলে এবং বাসায় রাখলে, তাতে আল্লাহ তায়ালা অপরিসীম রহমত দান করে থাকেন। এই তাফসীর শরীফ পাঠের বরকতে আল্লাহ যে মানুষের মনের আশা পূর্ণ করেন, তার অনেক ঘটনা রয়েছে। এমনই একজন আশেকা রাসূলের মাধ্যমে তাফসীর পাঠের বরকত লাভের ঘটনা প্রকাশিত হলো।

আশেকে রাসূল ফাতেমা, ১৯৬, আহম্মদনগর ( পাইকপাড়া ), মিরপুর - ১ , ঢাকা এর বাসিন্দা। তিনি সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী (মাঃ আঃ) হুজুরের একজন ভক্ত মুরীদ সন্তান। ব্যক্তিগত জীবনে অত্যন্ত সরল সহজ এবং বয়স্কা এই মহিলা লেখাপড়া জানেন না। তিনি সম্পর্কে আমার খালাম্মা হন। সূফী সম্রাটের লিখিত তাফসীর শরীফ ১ম খণ্ড যখন প্রকাশিত হয়েছে , তখন তিনি এই তাফসীর শরীফে দয়াল বাবাজান আল্লাহর আকার সম্পর্কে কি লিখেছেন, তা জানার জন্য অত্যন্ত ব্যাকুল হয়ে পড়েন। কিন্তু নিজে পড়তে পারেন না বলে, তিনি দমে যাননি। ১ হাজার টাকা হাদিয়ায় তাফসীর ক্রয় করে , ঐ তাফসীর শরীফ তাকে পড়ে শুনানাের জন্য আবার ১ হাজার টাকা দিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়া একটি মেয়েকে। ঠিক করলেন। সে প্রতিদিন ফাতেমা খাতুন (খালাম্মা) - কে এই তাফসীর শরীফ পড়ে শুনাতাে। এভাবে প্রথম খণ্ড থেকে শুরু করে। ফাতেমা খাতুন তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী ’ র প্রকাশিত পূর্ববর্তী সব খণ্ডই পড়িয়ে শুনেছেন। এতে অন্যদের চেয়ে তার ব্যয় হয়েছে দ্বিগুন। তবুও তিনি সূফী সম্রাট দয়াল বাবাজানের তাফসীর শরীফ শােনার জন্য উদগ্রীব হয়ে ওঠেন। ঘটনার বিবরণে জানা যায় - মহান সংস্কারক সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মাঃ আঃ) হুজুর কেবলাজান প্রণীত তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী ' ১ম খণ্ড প্রকাশিত হলে আশেকা রাসূল ফাতেমা খাতুন (খালাম্মা) এই তাফসীর সংগ্রহ করলেন। আর তা পড়ে শােনানাের জন্য ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে পড়াশুনা করা একটি মেয়েকে ঠিক করলেন , যার নাম ঝর্না বেগম, বাড়ী যশাের জেলায়। লেখাপড়ার খরচ যােগানাের জন্য তাকে টিউশুনী করতে হত। খালাম্মা ঐ মেয়েটিকে ১ হাজার টাকা দিয়ে তাফসীর শরীফ পড়ে শােনানাের জন্য ঠিক করেন। মেয়েটি নিয়মিত তাফসীর শরীফ পড়ে শােনায় বটে , কিন্তু তার অর্থ উপার্জন করার জন্য একটা চাকুরীর প্রয়ােজন হয়ে পড়ে। এমতাবস্থায় খালাম্মাকে তাফসীর পড়ে শােনানাের ক্ষেত্রে একটু অনিয়ম দেখা দেয়। এদিকে আশেকা রাসূল ফাতেমা খাতুন সূফী সম্রাটের একজন ভক্ত মুরীদ সন্তান হওয়ায়, মাের্শেদের প্রণীত তাফসীরে কি লেখা রয়েছে, তা জানার জন্য তিনি অত্যন্ত পেরেশান হয়ে পড়েন। তাফসীর পাঠ কারিনী মেয়েটিকে তিনি বললেন আমার বাবা সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মাঃ আঃ) হলেন অলীদের বাদশাহ। তিনি তােমার বিপদ দূর করে একটা চাকুরীর ব্যবস্থা করে দেবেন। তুমি আমাকে ঠিকমত তাফসীর পড়ে শােনাও। খালাম্মার মুখে একথা শুনে ঝর্না বেগমের বিশ্বাস হলাে। অতঃপর সে নিয়মিত তাফসীর শরীফ পড়ে শােনাতে থাকে এবং ১ম খণ্ড থেকে ৩য় খণ্ড পর্যন্ত পড়ে শােনায়। তাফসীর শরীফ পড়া শেষ করার কিছুদিন পরে সে চাকুরীর জন্য ইন্টারভিউ দেয়। আল্লাহর কি মহিমা ! ঝর্না বেগমের চাকুরী হয়ে যায়। এ ঘটনাটি অনেকের মনে বেশ আলােড়ন সৃষ্টি করে।

১ম খণ্ড থেকে ৩য় খণ্ড পর্যন্ত শােনার পরে ৪র্থ খণ্ড পড়ে শােনানাের জন্য কলেজে পড়া আর একটি মেয়েকে তিনি ১ হাজার টাকা দিয়ে ঠিক করলেন। মেয়েটির নাম চাঁদনী বেগম। তার পিতা মৃত মােঃ রবিউল্লাহ। সে আহম্মদনগর পাইকপাড়ার বাসিন্দা। পিতা না থাকায় মেয়েটি লেখাপড়ার খরচ যােগানাের জন্য টিউশুনী করতাে। এতে খালাম্মার ঠিকমত তাফসীর শােনা হতাে। তাই তিনি চাদনীর মাকে একথা জানালে, তিনি মেয়েকে বললেন, আগে খালাম্মাকে তাফসীর পড়ে শােনানাের পরে তুমি টিউশুনী করতে যাবে। এসময় খালাম্মা মেয়েটিকে লক্ষ্য করে বললেন - দেখ নাতনী ! তােমার তাে বাবা নেই, আমার দয়াল বাবাজান একজন মহান অলী আল্লাহ। তার লেখা তাফসীর শরীফে আল্লাহর রহমত ও বরকত রয়েছে। তুমি আমাকে নিয়মিত এই তাফসীর শরীফ পড়ে শােনাও, দেখবে এর বরকতে আল্লাহ তােমাকে একটি উত্তম বর দিবেন এবং ভাল ঘরে তােমার বিয়ে হবে। একথা শােনার পর চাদনী খালাম্মাকে নিয়মিত তাফসীর পড়ে শােনাতে থাকে। তাফসীর পড়া শেষ হয়ে যাওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই ঢাকায় নিজস্ব বাড়ী থাকা উচ্চ শিক্ষিত একটি যুবক ছেলে নিজেই প্রস্তাব দিয়ে, কোনরূপ যৌতুক ব্যতীত, বিয়ের সকল খরচ নিজে বহন করে পিতৃহীনা ঐ মেয়েটিকে বিয়ে করে। সকলে বলাবলি করতে লাগলাে পিতৃহীনা এই মেয়েটিকে বড়লােকের ছেলে কিভাবে বিয়ে করলাে? নিশ্চয়ই ওর উপর আল্লাহর রহমত আছে। বর্তমানে চাদনী বেগম স্বামীর বাড়ীতে সুখের সংসার করছে। আসলে ঐ মেয়েটির সুখের সংসার পাওয়ার পিছনে রয়েছে আল্লাহর অলী সূফী সম্রাট হুজুর কেবলাজানের বিশেষ দয়া। কেননা তার প্রণীত বরকতপূর্ণ এই তাফসীর পড়ে শােনানাের জন্যই মহান আল্লাহ তাকে এ পুরস্কার দান করেছেন ।

এখন তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী ' ৭ম খণ্ড পড়ার জন্য খালাম্মা অন্য একটি মেয়েকে ঠিক করেছেন। সে নিয়মিত তাকে তাফসীর শরীফ পড়ে শােনায়। ৭ম খণ্ড পড়ে শেষ করে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী (মাঃ আঃ) হুজুর কেবলাজান প্রণীত তাফসীর শরীফের সর্বশেষ খণ্ড (৮ম খণ্ড) পাঠ করে শােনাবার জন্য হয়তঃ আর একটি মেয়েকে ঠিক করে নিতে হবে। উল্লেখ্য যে, আশেকা রাসূল ফাতেমা খাতুন যে মেয়েদের দিয়ে তাফসীর শরীফ পাঠ করে শােনেন, তারা বেশিরভাগই তার বাড়ীতে ভাড়া থাকে। বাসা পরিবর্তনের ফলে তাদেরকে অন্যত্র চলে যেতে হয়। আর সে কারণেই তাফসীর শরীফ পড়ে শােনানাের জন্য তাকে নতুন কোন মেয়েকে ঠিক করতে হয়। তবে প্রতি খণ্ড তাফসীর পাঠের জন্য ১ হাজার টাকা চুক্তি করলেও খালাম্মা অনেককে আর্থিক অস্বচ্ছলতার জন্য তাফসীর পড়া শেষ হলে বখশিসও দিয়ে থাকেন। আল্লাহর মহান বন্ধুর প্রণীত এই বরকতপূর্ণ তাফসীর পাঠ করে শােনানাের জন্য পাঠকারিণী মেয়েরা যেমন রহমত বরকত লাভ করেছে, তদ্রপ সুফী সম্রাটের ভক্ত মুরীদ আশেকা রাসূল ফাতেমা খাতুনও মানসিক ও আত্মিক প্রশান্তি লাভ করেছেন। তিনি প্রতি খণ্ড তাফসীর শুনে শেষ করার পর আমার (লেখক) সাথে। যখন আলােচনা করেন, তখন মনে হয়, মনযােগ সহকারে তাফসীর পাঠকারী একজন ব্যক্তির মতই তিনি তাফসীর। শরীফে বর্ণিত বিষয়গুলাে অনুধাবন করেছেন।

সুতরাং আশেকা রাসূল ফাতেমা খাতুন লেখাপড়া না জানা সত্ত্বেও যদি সূফী সম্রাট দয়াল বাবাজানের প্রণীত সবখণ্ড তাফসীর শরীফ টাকা ব্যয় করে অন্যজনের দ্বারা পাঠ করিয়ে শুনতে পারেন, তাহলে আমরা যারা লেখাপড়া জানা শিক্ষিত লােক রয়েছি, পুরুষ - মহিলা নির্বিশেষে আমাদের উচিৎ সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী (মাঃ আঃ) হুজুর প্রণীত তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগীর প্রতিটি খণ্ড মনযােগ সহকারে অধ্যয়ন করা এবং এর মর্ম অনুধাবন করা। এক্ষেত্রে আশেকা রাসূল ফাতেমা খাতুন আমাদের জন্য দৃষ্টান্ত হতে পারেন। (প্রফেসর ড. অাব্দুল মান্নান মিয়া)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন